সদা যেন তব ইচ্ছা আনন্দে করি পালন।
১। যীশু তোমার রব শুনে, আশ্বাসিত হয়ে প্রাণে,
এসেছি তব সদনে, আশীর্বাদ কর দান!
২। কি আছে তোমারে দিব, অদত্ত কি আছে তব,
তোমারি প্রদত্ত সব, সম্পদ জীবন প্রাণ!
৩। শুচি কর এ অন্তর, শুদ্ধ রব নিরন্তর,
তব প্রেমে পূর্ণ কর, আনন্দে মাতিবে প্রাণ।
৪। বাসনা করেছি প্রাণে, সদা রব তব সনে,
তোমা ছাড়া এ জীবনে, অন্য আশা নাই এখন!
৫। দয়াল যীশু দয়া ক’রে, আত্মায় পূর্ণ কর মোরে,
সদাই তোমার তরে, করিব হে কালযাপন।
২৪৫ ১। প্রেম যে তুমি, আপন তুল্য আমায় সৃজন করিলে;
প্রেম যে তুমি, দিয়া মূল্য আমারে উদ্ধারিলে;
প্রেম যে তুমি, আমার মন তোমায় করি সমর্পণ।
২। প্রেম যে তুমি, সৃষ্টির পূর্বে মম মঙ্গল ভাবিলে,
প্রেম যে তুমি, নারীর গর্ভে মানুষ হইয়া আসিলে;
প্রেম যে তুমি, আমার মন তোমায় করি সমর্পণ।
৩। প্রেম যে তুমি, ক্রুশোপরে মৃত্যুর দংশন সহিলে,
প্রেম যে তুমি, আমার তরে ত্রাণের উপায় করিলে;
প্রেম যে তুমি, আমার মন তোমায় করি সমর্পণ।
৪। প্রেম যে তুমি, বল ও জীবন, সত্যের আত্মা আলোকময়;
প্রেম যে তুমি, মৃত্যুর বিক্রম করিয়াছ পরাজয়;
প্রেম যে তুমি, আমার মন তোমায় করি সমর্পণ।
৫। প্রেম যে তুমি, কবর হইতে মন দেহ উঠাইবে,
প্রেম যে তুমি, আমার লইতে মহিমাতে আসিবে;
প্রেম যে তুমি, আমার মন তোমায় করি সমর্পণ।
সি.ডবল. লীপ
২৪৬ সঁপি নাথ প্রাণ মন তব করে,
আজি হতে সমুদয়, দিলাম তব সেবায়, ক্রুশোপরে।
১। যা কিছু আছে আমার , সঁপিনু পদে তোমার,
কুল-শীল মান, জ্ঞান-অভিমান, তব তরে—
আজি হতে সমুদয়, দিলাম তব সেবায় , ক্রুশোপরে।
২। লও সুখের বাসনা, লও হে আত্মকামনা,
আত্মীয় স্বজন, বন্ধু, প্রিয়জন, চিরতরে—
আজি হতে সমুদয়, দিলাম তব সেবায় , ক্রুশোপরে।
৩। অহঙ্কার অবিশ্বাস, নিঃশেষে সব বিনাশ,
মম ও জীবন কর হে গ্রহণ, দয়া ক’রে—
আজি হতে সমুদয়, দিলাম তব সেবায় , ক্রুশোপরে।
আসি ক্রুশের সন্নিধান এখন তাহা বুঝিলাম;
দোষে লিপ্ত আমার মন ধূলিসম অধম জন,
পূর্ণ মুক্তি কর দান। তোমা দ্বারা বাঁচিলাম।
ধূয়া- বিশ্বাস করি তোমায় নাথ ৪। আমার যথা সর্বস্বই—
কালভেরী মেষ প্রিয়তম; স্বজন, সময়, পার্থিব ধন,
তব ক্রুশে প্রণিপাত, দেহ আত্মা সমস্তই
রক্ষ, আমি নরাধম! করি, তোমায় সমর্পণ।
২। ব্যাকুলিত মন-প্রাণ , ৫। আমার মনের ভরসা
প্রভু তব কারণে; তব সত্য প্রতিজ্ঞায়’
কর আমায় শান্তিদান আহা, তোমার করুণা
তোমার মধুর বচনে। ব্যক্ত নাহি করা যায়।
৬। তব শুভাগমনে
দূরে গেল পাপ ও ক্লেশ;
সুখী হইলাম এক্ষণে,
তুমি ধন্য হত মেষ।
২৪৮ দয়া করে অধীনেরে দিলে দেখা দয়াময়,
তুমি ধন্য দয়াল যীশু শত মুখে গাব তোমার জয়।
১। তোমার শ্রীচরণ তলে শত নক্ষত্র জ্বলে,
শত চন্দ্র জ্বলে তোমার ঐ শ্রীমুখ মন্ডলে;
সুরধুনীর ধারা যেমন বয়।
২। শাস্ত্রে শুনেছি উক্তি, করিতে পাতকী মুক্তি--
জন্মেছিলে গোশালাতে ধ’রে শিশুর মূর্তি,
আমার পাপে মলিন হৃদয় মাঝে দয়াল
তেমনি এসে হয়েছে উদয়।
৩। তোমায় দিতে উপহার কিছু নাই আমার,
ভক্তি বিশ্বাস পুণ্য সম্বল শূন্য কাঙ্গাল দুরাচার,
বসে ভাসিতেছি নয়নজলে
আমি র্স্বশূন্য কাঙ্গাল দুরাশায়।
৪। আমার দেহ জীবন মন তোমায় করি সমর্পণ,
এই আত্মা উৎসর্গ করি পায় হে ঈশ্বর-নন্দন,
তুমি গ্রহণ কর আমার এই দান দয়াল
পবিত্র করে চরণ ধূলায়।
প্রিয়নাথ বৈরাগী
২৪৯ জগত পিতা গো, করি তোমার পায়ে আত্মসমর্পণ;
তুমি সারা নিশি জেগে থাক, তোমার সন্তানে রক্ষার কারণ।
১। কাল নিশি ভোরে, পিতা তুমি মোরে সুখ নিদ্রা হ’তে
যখন জাগাইলে, নয়ন মেলে আমি দেখেছিলাম শ্রীচরণ।
২। তোমার দয়ার হস্ত, আমার এই মস্তকে রেখে ধীরে ধীরে,
তুমি দিয়েছিলে এই কাঙ্গালে, তোমার আশীর্বাদ অমূল্য ধন।
৩। মনে ছিল আশা, সারাদিন ধরে আমি পূঁজিব তোমারে!
আমার সকল কাজে জগৎ মাঝে, হবে তোমার মহিমা কীর্তন।
৪। দিবা অবসানে ব্যথিত অন্তরে, ভাবি বসে বসে,
আমি বারে বারে তোমায় ছেড়ে , কত দূরে করেছি ভ্রমণ।
৫। আমি ভূলিয়াছি বারে বারে তোমায় অসার চিন্তায় মজে,
কত কলঙ্ক মেখেছি অঙ্গে, কত শান্তি প্রদান দাসে,
৬। পিতা ক্ষমা কর, দয়া করে কর শান্তি প্রদান দাসে,
দেও ঐ চরণে স্থান হে দয়াবান; আজ এই রজনীর বিশ্রাম কারণ।
প্রিয়নাথ বৈরাগী
২৫০ চালাও অধীনে নাথ, প্রতি পদে প্রতিক্ষণে,
দুর্বল অজ্ঞান আমি, দেখিতে নারি নয়নে।
১। তোমার প্রশস্ত করে, ধর মম ক্ষীণ করে,
চালাও আমারে ধ’রে, অমর – ভবন পানে।
২। তুমি জান মম বল, ওহে দুর্বলের বল,
তুমি হও আমারি বল, পূর্ণ কর দিব্য জ্ঞানে।
৩। এখন আমি চলব নাথ, ধরিয়া তোমার হাত,
তুমি থাকলে আমার সাথ , ভীত না হইব মনে।
৪। যে করে প্রকান্ড বিশ্বে, চালাইচ বিনা ক্লেশে,
সে কর প্রতি নিমিষে, অবশ্য রক্ষিবে দীনে।
অমৃতলাল নাথ