খ্রীষ্টীয় গানের বই - যীশু খ্রীষ্টের বিজয় যাত্রা, দুঃখভোগ ও মৃত্যু



নিচে আপনার পছন্দের লেখকের নাম বা গানের শিরোনাম টাইপ করুন



যীশু খ্রীষ্টের বিজয় যাত্রা, দুঃখভোগ ও মৃত্যু

গানের শিরোনাম
MP3 Dwonload

76. হোশান্না!হোশান্না!এ এলেন শান্তিরাজ।

ধন্য!তিনি ধন্য! পথ খুল যীশুর জন্য;নিজ রাজ্য লইবেন আজ।
১। যিরূশালের দিকে যায়, গাধায় চড়িয়ে কে?
লোক কত আগে পিছে যায়- কি বলে পথিকে?
কি বলে পথিকে?
২। অপূর্ব সাজে সাজিয়ে শ্রীযীশুর সৈনিক যায়,
নিজ বস্ত্র পথে পাতিয়ে -খেজুর পাতা উড়ায়
খেজুর পাতা উড়ায়।
৩। হে সিয়োন কন্যে! পূরিবে আজ শাস্ত্রের এই বচন-
ঐ দীন বেশে হ’বে তোমার রাজার আগমন,
তোমার রাজার আগমন।
৪। নগরে শোভে সন্ধালোক ও চূড়া স্বর্ণময়;
রব শুনি ছাদে উঠে লোক - অপেক্ষা করি রয়,
অপেক্ষা করি রয়।
৫। ত্রাণেশের কিন্তু মন নিরাশ, গ্রহিবে কি আমায়?
কি সত্যের পক্ষে এই উল্লাস - না জগত রাজ্য চায়,
না জগত রাজ্য চায়?
৬। অমায়িক শিশুগণের ভাব নাথ হেরি মন্দিরে,
স্তব - গানে করেন প্রীতি লাভ - তাই মনে রাখ রে
তাই মনে রাখ রে।
-উইলিয়াম কেরী।

77 .১। গেৎশিমানী বনে, নিকুঞ্জ- কাননে, প্রভু কি কারণে

বসেছ একাকী
কিসের লাগিয়ে, নগর ত্যজিয়ে,এখানে আসিয়ে
মুদিয়াছ আঁখি?
২। তিক্ত পানপাত্র, দেখি তব গাত্র, শিহরয়ে সত্য,
ওহে ত্রাণপতি
তাহারি কারণ, হয়ে ক্ষুণœ মন, আসিয়া বিজন,
ভাবিতেছ নাকি?
৩। মম পাপ তরে, নিজ কলেবরে, এত কষ্ট ধ’রে
করিছ এন্দন,
আহা নাথ মম তরে, মম পাপ ক্ষম, আমি তোমা সম,
কেহ নাহি দেখি।
৪। ওহে পাপহারি ,তব দুঃখ স্মরি, চক্ষে বহে বারি,
সস্বরিতে নারি।
অভাজন আমি, দয়া কর স্বামী, মম ত্রাতা তুমি,
তব পদে থাকি।
হেমচন্দ্র কবিরাজ(১৮৭৭)

78.এ ঘোর তামসী নিশায়, কে তুমি বিজন বনে?

দুহতেছে কলেবর,দীর্ঘশ্বাস হুতাশনে।
১। ও চারু কোমল কায়, কেন ধুরাতে লুটায়?
দেখে হৃদি ফেটে যায়, থাকে না নীর নয়নে।
২। নিদাঘে স্বেদের মত, ঝরিছে রুধির স্রেত,
আহা মরি কেন এত, সহিছ দূঃখ জীবনে।
৩। ঊর্ধ্বে করি নেত্রপাত, জুড়িয়া যুগল হাত,
কেন বলি পিতঃ, পিতঃ, ডাকিছ কাতর মনে?
৪। তারিতে পাতকিকুল, তুমি কি এত ব্যাকুল?
ওহে অকুলের কুল,তর এ অধম জনে।
-অমৃতলাল নাথ(১৮৮০)

79. দেখ রে পাপীর তরে কাঁটার মুকুট মাতাতে,

ক্রুশ-ভারে অবনত পথ বহি যাইছে।
১। তিরস্কার অপমান সবে তাঁর করিছে,
সদ্দূকী ফরীশীগণে ব্যঙ্গ করি হাসিছে।
২। যিনি এক নিমিষেতে পারেন সৃষ্টি নাশিতে,
পিতার ইচ্ছা পালিতে, ন¤্রভাবে সহিছে।
-লক্ষীনারায়ণ দাস(১৮৯৬)

80. ঐ যে ঐ দেখ রে কাল্ভেরি প’রে,

ভগ্ন-কলেবর পরমেশ-কুমারে!
কিসের কারণে সহেন পরাণে
বিষম যাতনা বল কার তরে?
১। শোণিতের ¯্রােতঃ বহে অবিরত,
বিদ্ধ হস্ত পদ অয়স-কিলকে;
বড়শা সুধার বিদ্ধ কক্ষে তাঁর,
কন্টক- মুকুট শোভে শিরোপরে।
২। কাতর নয়নে চেয়ে তব পানে,
কহেন ঘনে ঘনে -ভুল না আমারে,
মরিলাম আমি, রক্তে ভিজে ভূমি,
যেন বাঁচ তুমি, এই বাসনা রে।
-ঈমানচন্দ্র দাস(১৮৮৪)

81.রক্ত ঝরে, রক্ত ঝরে, রক্ত ঝরে,

রক্ত ঝরে ॥
পাপের পশরা শিরে নিয়ে
বিশ্বের গ্লানি সব ব’য়ে
কালভেরী গিরি পরে
পাপী চেয়ে দেখ,ঐ ক্রুশ পরে।
রক্ত ঝরে ॥
মেটাতে পাপের দেনা যত
বহিছে রুধির ¯্রােত
কাঁটার মুকুট শিরে
পাপী চেয়ে দেক ঐ ক্রুশ পরে।
রক্ত ঝরে ॥
বিশ্বাসেতে মুক্তি পাবে
মরণ ভয় আর না রবে
কেঁদে বলো সবারে
পাপী চেয়ে দেখ ঐ ক্রুশ পরে।
রক্ত ঝরে ॥ - বীণা দত্ত

82. হেরি আজি ক্রুশোপরে, যীশু পাতকী তারণে;

লয়ে মানব সব পাপভার,পাতকীজন সঙ্গে রে।
শির শোভিছে কন্টক মুকুটে, হস্ত-পদ বিদ্ধ অয়স কীলকে
ঝরে পলকে পলকে, রুদির কোমল অঙ্গে রে।
১। প্রেমের মূরতি কেন টাঙ্গান আজি ক্রুশ-গাছে।
কেন আজি বিশ্বপতি ভুগিছেন অভিশাপে!
কার তরে, কার তরে, ত্যজেন পরাণ বল অকাতরে,
ভয় কি, পাপী! তোমার কারণে হেন দুঃখ সহেন রে!
২। আপনারে বলি দিতে, দেখেছ কারেও ধরা মাঝে?
সত্য বল, ওরে নর,এমন প্রেম কারও আছে?
তবে কেন , তবে কেন, আশাহীন হয়ে যাপিছ জীবন?
সত্বরে এস তাঁহার সদন,পাবে সুখ অন্তরে রে।
-রসময় বিশ্বাস

83.দেখ দেখ, একবার চেয়ে দেখ, ঐ ক্রুশোপরে,

মরিয়াছেন যীশু পাতকী তরে।
১। যে শোণিত ঝরিতেছে, তাতে পাপীর প্রাণ বাঁচে,
কোথায় এমন জীবন দিতে সুধা ঝরে।
২। পাপ তাপ দূরে যাবে, হৃদি মাঝে শান্তি পাবে,
চিত্ত পরিষ্কার হবে, যীশুর রুধিরে।
৩। যীশুর প্রেম মহাবল, দুর্বলেরে দেয় বল,
বিনাশে পাপের বল, পাপীর অন্তরে।
৪। দেখ পাপী চেয়ে দেখ, এ মরণ মনে রেখ,
শ্রীযীশুর নাম লেখ হৃদয় মাঝেরে।
-অমৃতলাল নাথ(১৮৮০)

84.তব প্রেম দেখে আমি- যীশু মনে হলেম হতজ্ঞান;

তুমি প্রাণ দিয়া নাথ, প্রাণের প্রাণ।
প্রেক শলাকাঘাতে,
১। আহা দারুণ ক্রুমেতে,
আমার প্রাণ কাঁপিছে থর থর

করে ক্রুশ ধ্যান।
২। আমি ক্ষুদ্রানুক্ষদ্র, জ্ঞানে হয়েছি আর্দ্র,
আমার ক্ষুদ্র মনে থাকে যেন,
দয়াল যীশুর নাম।
৩। একি শুভ সমাচার, প্রাণের যীশুই আমার ,
প্রিয় যীশুর বরে, পিতার করে
আঁকা আমার নাম।
৪। আমি পাপী নগণ্য, যীশুর হয়েছি গণ্য,
তাই যীশু ধন্য, যীশুর হয়েছি গণ্য,
তাই যীশু ধন্য, যীশু ধন্য
গায় মম প্রাণ।
-বিন্দুনাথ সরকার

85. উদয় হও এই হৃদয় মাঝে , একবার ঐ রুপ দেখি নয়ন ভরে হে।

১। এস ত্রাতার মূর্তি ধরে, তুমি বিদ্ধ আছ ক্রুশোপরে হে,
তোমার মস্তকে কন্টকে রক্তধারা ঝরে রে।
২। শ্রীমুখ তোমার রক্ত মাখা, মুখে প্রহার চিহ্ন আছে আকা হে,
মুকে বিনতি - অগতি পাপীগনের তরে হে।
৩। দুই হাত তুমি বিস্তার করে, বুঝি ডাকিতেছ পাপী নরে হে;
দুই হাত দাঁড়ায়ে আছ ক্রুশোপরে হে।
৪। কোন পাষন্ড দয়াশূন্য,তোমার বক্ষ করেছে বিদীর্ণ হে,
ঝরে রক্তজল অবিরল দর দর ধারে হে।
৫। প্রেকে বিদ্ধ ঐ শ্রীচরণ আমি হৃদ-মন্দিরে করব ধারণ হে,
রব চিরকাল হে দয়াল, ঐ চরণে পড়ে হে!
৬। যতদিন আছে এই জীবন, যেন সদা ঐরুপ করি দর্শন হে,
এসে হও উদয় দয়াময়, হৃদয় মন্দিরে হে।
-প্রিয়নাথ বৈরাগী

86. পিতঃ হে, তোমার হস্তে

কমি আত্মা সমর্পণ।
এই কথা বলি যীশু
করেন মস্তক নমন।
১। আমার দুঃখের ভারে
ব্যথিত দেহ - অন্তরে ,
দিতেছেন প্রাণ অকাতরে;
কিবা ধৈর্যপরায়ণ!
২। অন্তিমেতে, প্রিয় ত্রাতা,
হও মম শান্তিদাতা,
যেন অবসানে ত্রাতা,
শ্রীমুখ পাই দরশন।
৩। তব কোলে শয়ন করি
মাথা রাখি বক্ষোপরি
তব ক্রুশ চক্ষে হেরি
যেন হয় মম প্রয়াণ।
-ভবানী চরণ চৌধুরী

87. শোন্ পাপী প্রাণ খুলে, যীশু কাঁদেন তোর তরে।

হাতে পায়ে পেরেক গাঁথা যাতনা পান অন্তরে।
১। দুঃখ কি লাগে না তোর, তাঁরে দেখে ক্রুশোপর,
তোর তরে ঐ গাছেতে প্রাণ দেন অকাতরে;
যীশু যীশু যীশু ব’লে ,কাঁদ পাপী ,প্রাণ ভ’রে।
২। পিপাসায় তাঁর প্রাণ যায়, দর দর রক্ত ধায়,
সর্ব অঙ্গে ব’য়ে যায়, নয়ন মেলে দেখ রে!
পাপীর বন্ধু প্রাণের যীশুর একি দশা হলো রে।
৩। নরক দুঃখ বড় দায়, জেনে যীশু দয়াময়
ব্যস্ত হ’য়ে ক’ন পিতায়, মরিব পাপীর তরে,
আমার দুঃখে যেন পাপীর সুখ হয়, পিতাঃ, অচিরে।
৪। পাপী, বাঁচ পাপ হ’তে , এড়াও নরক দায় হ’তে,
নাচ জয়-উল্লাসে, একেবারে পাপ ছেড়ে;
প্রাণ দিয়া বাঁচালেন প্রাণ, যীশু মরি’ ক্রুশ’ পরে।

88. ১। আমি আর সইতে পারি না--

আমার ত্রাণ নাথ আজ ক্রুশেতে।
২। পাথ লোক যাচ্ছে সারি সারি হে--
তারা দেখিয়া কেউ দেখে না ।
৩। নিষ্ঠুর সেনাগণে বর্শা হানে হে--
তার কারুর বারণ শুনে না।
৪। প্রভুর পিপামা হয়েছে ভারী হে--
একটু জল চেয়ে তা পেলেন না।
৫। খেদে পর্বতগণ বিদীর্ণ হইল হে--
হেরে ত্রাণনাথের যাতনা।
৬। যীশু তোমার জন্য এত সইলেন হে--
তোমার কঠিন মন কি গলে না?
বিন্দুনাথ সরকার ও কৈলাসচন্দ্র সরকার(১৮৮৯)

89. কোথা, ওহে প্রাণ নাথ করিছ প্রয়াণ

কার দোষে দস্যুসম দিতেছ পরাণ?
১। নিরীহ মেষের মত
ঘাতকের করে হত;
বল, নাথ, কার তরে
হও বলিদান।
২। নিষ্পাপ শিরেতে কেন
কন্টক কিরীট হেন!
হেরি তাহে রক্ত¯্রােতঃ
কাঁদে এ পরাণ।
৩। প্রেকে বিদ্ধ পদ কর,
শেলে হানে অভ্যন্তর;
কেন, নাথ , হেন দুঃখ
হেন অপমান।
৪। জানি, নাথ মম তরে
ভুগ শাপ কলেবরে;
ক্রুশোবারে ত্রাণ।
৫। চহি নাথ, এই বর ,
যেন আমি, নিরন্তর
তব ক্রুশ মৃত্যু মরে
করি চিন্তা ধ্যান।
-যাকোব বিশ্বাস

90. হায় রে আমার জন্য, আমার করতে ত্রাণ

যীশু দিলেন প্রাণ।
১। আমার তরে
দয়া ক’রে
যীশু ক্রুশে যান,
দুঃখ সইলেন
কষ্টে মরলেন,
কত অপমান।
হায় রে আমার জন্য.....
২। প্রেমের বলে
এত করলেন,
প্রভু ! দিব কি?
প্রেম ও ভক্তি
যত শক্তি
তোমার পায়ে দিই।
হায়রে আমার জন্যে.....
- মিসেস ডবলিউ, জি , ক্রপ্টস্

91.১। যে ক্রুশে গৌরব অধীশ্বর

বিসর্জন করেন কলেবর,
সেই ক্রুশটি যখন করি ধ্যান,
বিস্ময়ে মুগ্ধ হয় এ প্রাণ।
২। মোর পার্থিব লভ্য মহীয়ান
সকল লোষ্ট্রবৎ করি জ্ঞান
সব গর্বের উপর অনুক্ষণ
অবজ্ঞা করি বরিষণ।
৩। হে প্রভু, প্রসাদ কর দান,
খ্রীষ্ট রক্তে শ্লাঘা করুক প্রাণ;
সেই রক্ত বিনা কিছু আর
না শ্লাঘার বিষয় হোক আমার।
৪। ঐ দেখা তাঁহার শির ও হাত,
তাঁর পায়ে কর দৃষ্টিপাত
তা হইতে প্রেম ও দুঃখচয়
মিশ্রিত হইয়া পতিত হয়।
৫। এই প্রেম ও দুঃখের বিমিশ্রণ
হইয়াছে কি আর কদাচন?
এই রূপ অমূল্য কন্টকময়
কিরীট কি কভু, সজ্জিত হয়?
৬। এবিশ্বমন্ডল সমুদয়
যদ্যপি আমার লব্ধ হয়,
তা আমার পক্ষে ক্ষুদ্রতম
উপহার বলি হয় গণন।
মূলঃ আইজ্যাক্ ওয়ট্স
অনুবাদঃ মদন মোহন বিশ্বাস

92.কি অপরূপ রূপ নাথ, ধরেছ আজ ক্রুশোপরে,

এ হেন মোহন মূর্তি দেখেছে কে চরাচরে!
১।ঝরিছে ভালে রুধির,কন্টকে শোভিছে শির,
ভাতিছে সুন্দর কর লোহিত কমলাকারে।
২। জিনি তরুন তপন ও চারু মুখ-বরণ,
হেরে যুগল চরণ রক্ত জবা লাজে মরে।
৩। বহিছে রুধির-স্রোত বক্ষ হ’তে অবিরত,
কৌপীনে বপু ভূষিত, করেছ মন হরিতবারে।
৪। হেরে ও মুখ-সরোজ, দিননাথ পেয়ে লাজ,
লুকায়েছে ঘন মাঝ, শিহরিছে ধরিত্রীরে।
৫। ফেরে না নয়ন মম, হেরে রূপ অনুপম,
হেন স্বার্থহীন প্রেম, কে আর হৃদয়ে ধরে।
-অমৃতলাল নাথ (১৮৮০)

93. কালভেরী গিরিশিরে, ঝুলিতেছেন ক্রশোপরে ঈশ্বর কমার।

ঐ যে রক্তাক্ত সেই সোনার তনু, রক্ত বহিতেছে দরদর,
সিক্ত করি ক্রুশকাষ্ঠ পর্বত শিখর।
১। মস্তক কন্টকমন্ডিত, ললাট তাঁর রুধিরাক্ত, স্তিমিত দু’টি নেত্র
সোনার অঙ্গ কাঁপে থর থর ।
দারুণ যাতনা জর্জর কণ্ঠে,তিনি করিতেছেন আর্তস্বর
“ক্ষম মোর এই শত্রুগণে,পিতা দয়াধার।”
২। যীশুর মরণের চিত্র, ধ্যান কর দিবারাত্র ,মুক্তির পথ ঐ একমাত্র ,
অন্যপথ নাহি ভবে আর
তুমি তাঁর মরণে পাবে জীবন, কর আত্মোৎসর্গ পায়ে তাঁর,
ঐ শোণিতে হবে ধৌত যত পাপ তোমার।

প্রিয়জনের জন্য প্রিয় উপহার !


Total Pageviews