খ্রীষ্ট সঙ্গীত । গান বই। সমবেত উপাসনা (1-19)
1. আজি এলেম প্রভু, তোমার ঘরে করিতে ভজন
গীত ২৭: ৪; লেবীয় ২৫: ২১
কাফি- ছেপকা (জৎ)
আজি এলেম প্রভু, তোমার ঘরে করিতে ভজন
দীনহীনে দয়া কর, করি নিবেদন।
১. তব গৃহে যারা যায়, অবই সান্ত¦না পায়,
নিরলস হ’য়ে যেন, করয়ে সাধন।
২. তব স্থান কেমন মান্য, যেই যায় সেই ধন্য,
হয় তারা মহামান্য, পেয়ে খ্রীষ্ট-ধন।
৩. তোমার কথা যখন শুনে, ভাবে তখন মনে মনে,
প্রভু আছেন এই স্থানেন, শাস্ত্রের বচন।
৪. বৃষ্টি দ্বারা মরুভূমি, যেমন আর্দ্র কর তুমি,
তেমনি কর হে স্বামী, ভক্তদের মন।
৫. আমরা অতি দুরাচার, উপায় নাহিক আর,
কৃপা করি গ্রাহ্য কর, পাতকি-জীবন।
( অজ্ঞাত-১৮৭৭)
2.এস হে করুণাময়, বিরাজ হৃদয়াসনে,
পূজিতে তোমারে আজি, বাসনা সবার মনে।
১। তব দাস দাসী যত, হইয়াছি সমবেত,
তৃপ্ত কর সবে পিতঃ মনোমত আশ্সি দানে।
২। অর্পিতে পদে তোমার, আনিয়াছি উপহার,
ভকতি-কুসুম- হার, লহ লাথ নিজ গুণে।
( ঈশান চন্দ্র দাস-১৮৯৪)
3. চল সকলে যাই যীশুর সদনে,
ডাকিতেছেনন দয়াল যীশু মধুর বচনে।
১ । ওহে পরিশ্রান্ত ভারাক্রান্ত সর্ব পাপী জন,
আমার নিকটে আইস পাবে শান্ত মন;
মোর জোয়ালি সহজ ভার লঘু-বহনে।
২। আমার নিকটে আইলে ক্ষুধা নাহি রয়,
আমাতে বিশ্বাসী হইলে পিপাসা পলায়;
বহে আনন্দ অমৃত নদী সতত মনে।
৩। যে জন সতত যীশুর বচন মানে,
তাঁহার প্রেমের মাহাত্ম্য কেবল সে জানে;
যীশু নিরন্তর করেন স্থিতি তাহার মনে।
-মথুরানাথ বসু( ১৮৮৫)
. ‘প্রাণের যীশু’ ব’লে যবে ডাকি গো তোমায়,
তুমি আড়ালে দাঁড়ায়ে শুনিও;
নয়নের জলে হৃদয়ের জল,
মিশে কি না, তাহা দেখিও
১। নাথ, তুমি হে আমার হৃদয়ের ধন
করি তোমায় যবে আত্মসমর্পণ;
অর্পণেণর হেতু যাহা প্রয়োজন,
রহে কি না, তাহা দেখিও।
২। তোমার সেবার আয়োজনে যাহা প্রয়োজন,
না জানি গুছাতে আমি অভাজন,
যেন ভ্রম- তমঃ হয় নিবারণ,
তাই মন্ত্রী হয়ে সঙ্গে রহিও।
৩। আমার হৃদয়ের আলো করিতে নির্বাণ,
জল- বন্যারূপে আসে শয়তান;
তুমি তৈল - কুম্ভসহ আড়ালে থাকিয়া,
মৃদু মৃদু ধারে ঢালিও।
-বিন্দুনাথ সরকার( ১৮৯৫)
5. ডাকি কাতরে, ওহে দয়াবান,
আসি সভাতে কর অধিষ্ঠান।
১। আমরা দীন, ধরমবিহীন,
তে লাগি তোমায় ডাকি ঘন ঘন;
কর, কর নাথ, ধর্ম আত্মা দান।
২। ভিখারী যেমন ডাকে ঘন ঘন,
ডাকিছি মোরা প্রভু হে তেমন;
কর, কর নাথ, কর আশিস্ দান।
৩। গাইবো মোরা তব গুণগান,
ধরিব আজি যীশু নামে তান,
দেও শকতি গাহিতে সে গান।
৪। পূজিব তব যুগল চরণ
করেছি মোরা একান্ত মনন;
কর, কর নাথ, কর শক্তি দান।
- রামচরণণ ঘোষ ( ১৮৯০)
6. কাতর হইয়া নাথ, এসেছি তব দ্বারে,
উলঙ্গ ভিখারী সম, করুণা পাবার তরে।
১ । প্রেম আলিঙ্গন দানে, নিবাও হৃদি- হুতাশনে,
রাখ নাথ সযতনে, শ্রান্ত শির বক্ষোপরে।
২ । তব প্রেমে দয়াময়, পূর্ণ কর এ হৃদয়,
আসি সম্মুখে দাঁড়াও, দেখি রূপ নয়ন ভ’রে।
৩। মম প্রতি হও সদয়, বিদীর্ণ হ’তেছে হৃদয়,
মন মাঝে হও উদয়, নাশ পাপ অন্ধকারে।
- অমৃতলাল নাথ ( ১৮৮০)
7.এলেম তব দ্বারে, ভিক্ষার ঝুলি প্রভু দেও পুরে;
মোদের যত প্রয়োজন, আছে তব ভান্ডারে।
১। যীশুর রক্তে ক্রীত ধন, আছে সব অগণন;
কর আজি বিতরণণ, নির্ধনে দয়া ক’রে।
২। দুখী কাঙ্গাল যত জন, কর তাদের ধনবান;
হ’য়ে প্রফুল্লিত মন, প্রশংসে তোমারে।
৩। ধনবান হব বলে, এসেছি মোরা সকলে;
দয়ার ভান্ডার দেও হে খুলে, তৃপ্ত কর দান ক’রে।
- গগনচন্দ্র দত্ত ( ১৮৯২)
8.প্রভুর ধন্যবাদ কর ভ্রাতৃগণ,
একচিত্তে গাও সবে তাঁহার গুণগান।
১। তাঁহার নামে যত জনে, উপস্থিত হয় একই স্থানে,
প্রভু আসি সেই খানে, হয়েন অধিষ্ঠান।
২। পূর্বকালে শিষ্যগণে, মিলিত হয়ে একই স্থানে,
পুলকিত হইল সবে পেয়ে আত্মা দান।
৩। সে আশাতে এই স্থানে আসিয়াছি র্স্বজনে,
প্রভু, আশীর্দানে পূর্ণ কর সবার মন।
9.সুললিত তানে, যীশু গুণগানেন, মাতরে আজি ভগিনী ভাই,
মনের হরষে, বদনেন মানসে, গাহি যীশু নাম ভুবন মাতাই।
(যীশুর মধু নাম গেয়ে)
১। বালিকা- বালক, যুবতী-যুবক, প্রাচীন- প্রাচীনা সকলে মিলে,
ভুলি অভিমান, ভেদাভেদ জ্ঞান, প্রেমের সাগরে পরাণ ভাসাই।
(যীশুর নামে আয়রে ও ভাই)
২। হৃদয়- আগারে, প্রেম ভক্তি ভরে, রাখিয়ে নাথের চরণ-কমল,
পূজিব যতনে, হরষিত মনেন, প্রীতি- ফুলে এস হৃদয় সাজাই।
( দয়াল যীশুর পা দু’খানি)
৩। প্রত্যাশা- গগনে, বিশ্বাস- নয়নে, নিরখিয়ে আজি ত্রাণ-সুধাকর
হৃদয় - চকোর, আমোদিত ক’রে, শান্তিসুধা পানে বিমোহিত হই।
(যীশু নাম নুধা- পানে)
৪। সকলে অন্তরে, প্রশংসার হারে, রচিয়ে নামে মধুর স্তর
স্বর্গের সুতানে , মিলি দুতসনে, এসরে আজি সকলে গাই।
(প্রেমময়ের নূতন ভাষায়)
-অমৃতলাল সরকার
10.এস নাথ সভা মাঝে, করি সবে এ বিনতি,
এস এস প্রভু যীশু, হও মোদের সভাপতি।
১। এসেছি এই মনে করে, পাইব সবে তোমারে,
হেরিব নয়ন ভ’রে, করিব তোমার স্তুতি।
২। ক্ষম সব অপরাধ, কর নাথ আশীর্বাদ,
পুরাও মনের সাধ, ওহে যীশু ত্রাণপতি।
৩। কর ধর্ম আত্মা দান, স্থির কর মোদের প্রাণ,
পূজিতে তব চরণণ, দেহ হে এখন শকতি।
৪। সভা মাঝে যেই জন, আছয়ে কঠিন মন,
করি আত্মা বরিষণ, দেহ তারে ধর্মমতি।
৫। আশীর্বাদ পাব বলে, এসেছি চরণতলে,
শুধু যেন না যাই চ’লে, ওহে যীশু স্বর্গপতি।
- রামচরণ ঘোষ
11. ওহে দয়াময়, দীন জনে ডাকে তোমায়,
মোদের আশা এই, সর্বজনে কৃপা পায়।
১। মোরা অতি দীনহীন, তাহে পাপে মোদের মন ক্ষীণ,
তুমি দীনের দীন দীনবন্ধু কৃপাময়।
২। অধিষ্ঠিত হও সভায়, মোরা করি বিনয়, তুমি হও সদয়;
আসি শ্রীচরণ দানে তুমি দেও অভয়।
৩। সভা করি দরশন, হয়ে হৃষ্টমন, করি নিবেদন,
তুমি পবিত্র আত্মা দেহ এ সময়।
বেণীমোহ বিশ্বাস
12.১। হোক যীশু নামের সমাদর,
দূত করুক প্রণিপাত;
দেও মুকুট শিরে তাঁর।
২। দেও মুকুট, সকল সাক্ষ্যমর,
গাও সবে অনিবার,
হোক দায়ূদ - সুতের সমাদর,
দেও মুকুট শিরে তাঁর।
৩। হে তূরীধারী করূবগণ,
প্রণমো বারংবার,
যাঁর সৃষ্ট আমরা সর্বজন,
দেও মুকুট শিরে তাঁর।
৪। হে আদম- বংশের মুক্ত নর
পুণ্যবান রক্তে যাঁর,
সেই ত্রাতার কর সমাদর
দেও মুকুট শিরে তাঁর।
৫। হে প্রত্যেক বংশ, প্রত্যেক জাত,
এই ভুবন মাঝার,
তাঁর কাছে কর জানুপাত,
দেও মুকুট শিরে তাঁর
মূলঃ এড্ওয়ার্ড গেরোনেট
অনুঃ যাকোব কান্তিনাথ বিশ্বাস
13.বড় আশা ক’রে প্রভু এসেছি আজ তব দ্বারে,
আশীর্বাদ দিতে হবে শুধু যেন না যাই ফিরে।
১। ডাকিতেছি ঘন ঘন, তৃষিত চাতক যেন,
জীবন-বারি বরিষণ কর এ সময়।
ওহে অগতির গতি তোমা বই নাই পাপীর গতি
হর মোদের সব দুর্গতি ক্ষমা করি এইবারে।
২। অঙ্গীকৃত শান্তি দানে, তৃপ্ত কর প্রতি জনে
চেতন হউক অচেতনে, তব দয়াতে,
তোমা বিনে যাব কোথা, কে শুনিবে পাপীর কথা,
যীশু তুমি পাপীর ত্রাতা, তাইতো ডাকছি জোড় করে।
-মহেন্দ্রলাল সিংহ
14.এস, দয়াল যীশু, এখন এস সভার মাঝারে;
আমরা দীনহীন পাপী, এস নাথ, কৃপা করে।
১। শুন, প্রভু নিবেদন, বস হৃদয় সিংহাসনে,
তব সেবা আরাধনে, রত রাখ দাসেরে।
২।সুধাসম বাক্য প্রতি, আকর্ষণ কর মতি,
প্রার্থনাতে স্থির ভক্তি, প্রদান কর অন্তরে।
৩। মোদের যাহা প্রয়োজন, জানন প্রভু বিলক্ষণ,
মঙ্গল ইচ্ছায় সর্বক্ষণ, প্রসাদ দেহ অন্তরে।
৪। পবিত্র আত্মা প্রদানে, শুদ্ধ কর দাসগণে,
বাড়াও তব তত্ত্বজ্ঞানে, আজীবন এ দাসেরে।
( অজ্ঞাত)
15.মোরা এসেছি আজ, তোমার দ্বারে, দয়াময়-
তুমি দয়া কর সর্বজনে দয়াল, হৃদয় মাঝে হও উদয়।
১। তোমার চাঁদ বদন দেখে, মোরা মাতির সুখে,
ধন্য হব তোমার চরণ ধূলা সর্বাঙ্গে মেখে, ( যীশু হে)
মোরা ভাসিবে হে প্রেমানন্দে দয়াল, গাব তোমার নামের জয়।
২।পাপের ক্ষমার কারণ, করব স্পর্শ ঐ চরণ,
ধরব হৃদয়ে শ্রীপাদপদ্ম, তুমি অশান্তিবারণ, ( যীশু হে)
মোরা জুড়াব হে সকল জ্বালা দয়াল, তোমার ঐ চরণ ছায়ায়।
৩।চির জনমের তরে মোরা সকলই ছেড়ে,
ধরব চরণ মিথ্যা জেনে সব এই অসার সংসারে, (যীশু হে)
তোমার আসার আশে ব’সে আছি দয়াল, নিজগুণে হও উদয়।
৪। ঘুঁচাও সকল অন্ধকার, ওহে ঈশ্বর কুমার,
অন্ধকার এই জগৎ মাঝে, তুমি সকল আলোর সার, (যীশু হে)
তুমি ঘুঁচাও মনের পাপের আঁধার দয়াল, চিত্ত কর আলোকময়।
-প্রিয়নাথ বৈরাগী
16.ওহে প্রভু, তুমি দয়াল, আমি দুরাচার,
অতি দীনহীন কাঙ্গাল, কহিব কি আর।
১।প্রভু যীশু, তুমি ধন্য, তোমার গুণ অপার,
ভব-মাঝে নাহি অন্য, তারণ করিবার।
২। যীশু তোমায় নিত্য ডাকি, হে করুণাময়
তোমার প্রেম যত চাখি, তত তৃষ্ণা হয়।
৩। যীশু হে, অমৃত বারি নিত্য কর দান,
অন্য সকল মিথ্যা মানি, ওহে দয়াবান।
৪। দয়াল যীশু, নূতন চিত্ত মোরে কর দান,
তবে আমি আহ্লাদেতে গাইব তোমার গান।
৫। দাতা তুমি, কর্তা তুমি, শুন নিবেদন,
দয়া কর তবে হই তৃপ্ত সর্বক্ষণে
17.১। মোদের মাঝে প্রভু এস প্রতাপে,
মোদের উপাসানা পুরাও আশীষে।
২। আত্মায় পূর্ণ কর মোদের চিত
দুঃখ- ভয়- যত কর দূরীভূত।
৩। জীবন যাত্রা পথে দ্রুত চলিব-
তব পুণ্যালোকে দৃষ্টি রাখিব।
অনুবাদ ঃ বিনয়ভূষণ সাংমা
18. কাঙ্গাল ডাকে দ্বারে দাঁড়ায়ে।
চরণধূলা পাবার আশে দয়াল, আছে দুই হাত বাড়ায়ে।
১। হৃদয় ভরা আছে ব্যথা, আছে প্রাণে কত কথা,
বলবে তোমায় জগত্রাতা, ধরে শ্রীচরণ জড়ায়ে।
২। শুনেছি হে ঈশ্বর নন্দন, এলে দ্বারে দুঃখী যে জন,
শূন্য হাতে তারে কখন, তুমি দাও না প্রভু ফিরায়ে।
৩। দিয়ে তারে চরণ তোমার, ঘুঁচাও যত অন্তরের ভার,
দয়াল তোমার দয়ায় যায় তার, প্রাণের সকল জ্বালা জুড়ায়ে।
৪। সেই আশাতে এসে দ্বারে, ডাকিতেছি বারে বারে,
দেও দরশন দয়া করে, দাসে রাখ চরণ আশ্রয়ে
- প্রিয়নাথ বৈরাগী
19.প্রভু আজি তোমার ঘরে,
দীনহীনে সভা করে, ডাকে তোমায় হে কাতরে।
১। তুমি করণ-কারণ, নির্বিকার নিরঞ্জন,
তুমি ঈশ্বর- নন্দন, পূজনীয় স্বর্গপুরে।
২। পূজিতে তব চরণ, সবার নিতান্ত মনন,
আসি দেহ দরশন, এই সভায় কৃপা ক’রে।
৩। তোমার প্রসন্ন বদন, সভায় করাও হে দর্শন,
প্রফুল্ল হোক সবার মন, তোমার সৌন্দর্য হেরে।
৪। মোরা অতি অভাজন, না জানি ভজন- সাধন,
করি কৃপা বরিষণ, দেহ ধর্মজ্ঞান সবারে।
৫। তব রাজ্যের আগমন, শীঘ্র হউক হে রাজন,
তোমার আজ্ঞা পালন, যেন করে জগৎ- নরে।
(অজ্ঞাত-১৮৬০)